যুক্তরাজ্যের ভিসা
যুক্তরাজ্যে ভিসা আবেদন কীভাবে করবেন, খরচ কেমন- এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেকের মনে। তাদের জন্য স্বস্তির খবর হলো- যুক্তরাজ্যে ভিসা আবেদন সম্পূর্ণ অনলাইনেই করা যায়।
তবে আবেদনকারীর উদ্দেশ্য, ভ্রমণের ধরন ও ব্যক্তিগত পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা থাকতে পারে।
যুক্তরাজ্যে ভিসার আবেদন কীভাবে করবেন, এতে খরচ কেমন- চলুন জেনে নেওয়া যাক:
আবেদন প্রস্তুত ও সময়সীমা
বেশিরভাগ ভিসার জন্য অনলাইনে আবেদন ও ফি পরিশোধ করা যায়। যদি পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে যেতে চান, তবে প্রত্যেককে আলাদা করে আবেদন করতে হয়।
ভ্রমণ ভিসা: ভ্রমণের ৩ মাস আগে আবেদন করা যায়।
কাজের ভিসা: চাকরির শুরুর তারিখের ৩ মাস আগে।
স্টুডেন্ট ও চাইল্ড স্টুডেন্ট ভিসা: কোর্স শুরুর ৬ মাস আগে।
স্থায়ীভাবে বসবাসের (সেটেলমেন্ট) আবেদন: অনুমোদন পেতে সর্বোচ্চ ৬ মাস লাগতে পারে।
ফি ও স্বাস্থ্য সেবা চার্জ
যুক্তরাজ্যে ভিসার আবেদন করতে হলে নির্দিষ্ট ফি পরিশোধ করতে হয়, যা ভিসার ধরন ও মেয়াদের ওপর নির্ভরশীল। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ছয় মাস মেয়াদি স্ট্যান্ডার্ড ভিজিটর ভিসার ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৭ পাউন্ড। শিক্ষার্থী বা চাইল্ড স্টুডেন্ট ভিসার ফি ৫২৪ পাউন্ড এবং তিন বছরের জন্য স্কিল্ড ওয়ার্কার ভিসার ফি ৭৬৯ পাউন্ড।
গ্লোবাল ট্যালেন্ট ভিসার জন্য ফি ৭৬৬ পাউন্ড, আর স্বামী-স্ত্রী বা পরিবারের সঙ্গে যোগ দেওয়ার ভিসার ফি ১ হাজার ৯৩৮ পাউন্ড। এর বাইরে আবেদনকারীদের স্বাস্থ্যসেবা সারচার্জ (IHS) দিতে হয়—প্রতি বছর সাধারণ ক্ষেত্রে ১ হাজার ৩৫ পাউন্ড এবং শিক্ষার্থী ও ১৮ বছরের নিচের আবেদনকারীদের জন্য ৭৭৬ পাউন্ড।
উল্লেখ্য, ফি প্রায়ই পরিবর্তন হয়। তাই সবসময় gov.uk/visa-fees ওয়েবসাইট থেকে সবশেষ পরিমাণ সম্পর্কে নিশ্চিত হোন। অতিরিক্ত খরচের (বায়োমেট্রিক ১৯ দশমিক ২০ পাউন্ড, টিবি টেস্ট ৬৫-১১০ পাউন্ড) বিষয়গুলো মাথায় রাখুন।
টিবি টেস্ট
যারা ছয় মাসের বেশি সময়ের জন্য যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন, তাদের ভিসা আবেদনের সঙ্গে যক্ষ্মা বা টিবি-মুক্ত থাকার সনদ দিতে হতে পারে।
পরিচয় প্রমাণ
আবেদনের সময় পরিচয় প্রমাণ ও প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র জমা দিতে হয়। এটি করা যায়—
* ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারে গিয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য (আঙুলের ছাপ ও ছবি) প্রদান করে অথবা
* স্মার্টফোনে ‘UK Immigration: ID Check’ অ্যাপ ব্যবহার করে।
কিছু ক্ষেত্রে ভিসা সেন্টারে যেতে হলে ভ্রমণ করতে হতে পারে, এমনকি অন্য দেশেও। ২৪০ দিনের মধ্যে পরিচয় প্রমাণ না দিলে নতুন আবেদন করতে হবে।
শিশুদের জন্য নিয়ম
১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের অবশ্যই একজন প্রাপ্তবয়স্কর সঙ্গে ভিসা সেন্টারে যেতে হবে। ৫ বছরের কম বয়সীদের শুধু ছবি দিতে হয়, আঙুলের ছাপ নয়।
সিদ্ধান্ত ও ফলাফল
আবেদনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে হোম অফিস থেকে ই-মেইল বা চিঠি দেওয়া হয়। সফল আবেদনকারীরা পান—
* ই-ভিসা (অনলাইনে ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাসের রেকর্ড) অথবা
* ভিনিয়েট স্টিকার (পাসপোর্টে সেঁটে দেওয়া ভিসা), অথবা উভয়ই।
ভিসার শর্তে উল্লেখ থাকে কোন কাজ করা যাবে, কোনটি যাবে না, যেমন—
* ‘No access to public funds’ মানে সরকারি সুবিধা পাওয়া যাবে না।
* ‘No work’ মানে কোনো ধরনের কাজ করা যাবে না।
* ‘Restricted work’ মানে শুধু নির্দিষ্ট স্পনসরের অধীনে কাজ করা যাবে।
ভিসা প্রত্যাখ্যান হলে
আবেদন নাকচ হলে ই-মেইল বা চিঠির মাধ্যমে কারণ জানিয়ে দেওয়া হয়। পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হয়। আবেদনকারী চাইলে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বা ইমিগ্রেশন আপিলের সুযোগ নিতে পারেন।